নতুন অর্থবছরের প্রথম মাসে রেকর্ড পরিমানে রেমিটেন্স এসেছে দেশে
রাশিয়া-উক্রেন যুদ্ধের মধ্য ২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রথম মাসে বিপুল পরিমান রেমিটেন্স পাঠিয়েছে প্রবাসীরা যা অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের প্রথম দিকে যে আশা দেখিয়েছিল তা পরেও বজায় রয়েছে প্রবাসীরা। আর এতে করে মাস শেষে প্রবাসী আয় বেড়ে হয়েছে ২০৯ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, যা গত ১৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, এ সময়ে আগের অর্থ বছরের ঠিক একই সময়ে জুলাইয়ের চেয়ে রেমিটেন্স বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশের মত।
এদিকে দেশের ব্যাংকিং চ্যানেলে মাধ্যমে গত অর্থবছরের প্রথম মাসে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার। আর জুলাই শেষে রেমিটেন্সের পরিমাণ আগের মাস জুনের চেয়ে ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। ওই মাসে এসেছিল ১ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার। আর এর আগে ২০২১ সালের মে মাসে এর চেয়ে বেশি ২ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল দেশে।
দেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স ২০২১-২২ অর্থবছরের নেতিবাচক অবস্থার পর চলতি অর্থবছরের শুরুর মাসে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি রেমিটেন্সে বাজে সময় কাটবে বলে আশা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘প্রবাসীদের রেমিটেন্স পাঠাতে প্রণোদনা বাড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সরকার বিভিন্ন নীতি সহায়তা দিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকও প্রবাসীদের বৈধভাবে রেমিটেন্স পাঠাতে উৎসাহ দিয়ে আসছে। আগের চেয়ে বেশি দর পাওয়ায় প্রবাসীরা উৎসাহী হয়ে জুলাই মাসে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন।’’
তাছাড়া গত ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স আগের বছরের চেয়ে ৩ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ১০৩ কোটি ডলার; প্রবৃদ্ধি হয় ঋণাত্বক ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ। এর আগের ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিটেন্স এসেছিল ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার; প্রবৃদ্ধি ছিল ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে জানা যায়।
সরবরাহ সংকটে কারনে দেশে ডলারের দাম বেশ কয়েক মাস থেকেই বেড়েই চলছে। ব্যাংকিং চ্যানেলের পাশাপাশি খোলা বাজারেও ডলারের দাম অনেক বেড়েছে । এমন অবস্থায় ডলার সংগ্রহে ব্যাংকগুলো বিদেশের এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে বেশি দরে ডলার ক্রয় করেছে। এদিকে গত ৩০ মে মাস থেকে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারের ‘ম্যানেজড ফ্লোটিং রেট’ নিয়ন্ত্রণ শিথিল করে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারের উপর ছেড়ে দেয় ডলারের রেট নিয়ন্ত্রন করার জন্য।
ফলে এরপর থেকে টাকার বিপরীতে ক্রমাগত ডলারের দাম বাড়তে থাকে দেশে। এসময় ব্যাংকগুলো প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে ১০০ টাকার উপরে কিনে নেয়। তাছাড়া অনেক ব্যাংক ১০৭ টাকা দিয়েও ডলার কিনেছে গত সপ্তাহে। এর ফলে আগের চেয়ে বেশি দাম পাওয়ায় প্রবাসীরাও ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে শুরু করেছেন এবং যার প্রভাব দেখা গিয়েছে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের শুরুর দিক থেকে রেমিটেন্স পাঠানোর পরিমাণ বাড়ছিল। অনেকেই হয়েতো ভেবেছে ইদুল আযহা এর কারণে প্রবাসীরা বেশি বেশি রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে যা প্রথম ২১ দিনেই জুন মাসের পুরো মাসের আয় ছাড়িয়ে গিয়েছিল। গত ২১ জুলাই পর্যন্ত দৈনিক গড়ে ৭ কোটি ৮৩ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছিল এবং মাস শেষে তা দাঁড়ায় দৈনিক গড়ে ৭ কোটিতে দাড়ায়। যা এ যাবৎ কালে সর্বোচ্চ প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স।
ভালো সংবাদ