রাতের খাবার কেমন হওয়া উচিৎ?
রাতের খাবার মূলত হওয়া উচিত হালকা এবং সহজ পাচ্য।রাতে একজন মানুষের হজমশক্তি সবচেয়ে কম থাকে। তাই রাতের খাবার হওয়া উচিৎ এমন যা সহজেই হজম হয়ে যায়।এবং রাতে কম খাওয়া উত্তম। এতে ঘুম ভালো হয়। তার বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররাও বলেন যে রাতের খাবার অনেক হালকা হতে হয় রাতের খাবার হাল্কা হলে তা দ্রুত হজম হয়ে যায়।রাতে অতিরিক্ত খাবার খেলে তা দ্রুত শরীরের ওজন বাড়িয়ে দেয়।অতিরিক্ত ওজন বিভিন্ন রোগের ঝুকি বাড়ায়। তাই রাতের খাবার হবে হালকা এবং খাবার খেতেও হবে তাড়াতাড়ি ঠিক রাত ৮ টা থেকে সাড়ে ৮ টার মধ্যেই। চলুন জেনে রাতের খাবারে আমরা কিধরনের খাবার রাখতে পারি যা দ্রুত পরিপাক হয়। রাতের খাবারের মধ্যে নিম্নে উল্লেখিত খাবার গুলো রাখতে পারেন….
১. রুটি সবজি এবং সালাদ
রাতের খাবারে ভাতের বদলে রাখতে পারেন দুটো লাল আটার রুটি সাথে এক বাটি সবজি সাথে একটা সিদ্ধ ডিম, একপিস মুরগির মাংশ অথবা এক টুকরা মাছ রাখতে পারেন।সবজি হিসেবে আলু খাবেন না, কারণ আলুতে শর্করা থাকে। আর রাখতে পারেন শসা, গাজর টমেটো দিয়ে তৈরি মিক্সড সালাদ।এই খাবার গুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্টার্চ,ভিটামিন, প্রোটিন, ফ্যাট সব ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
২. ভাত এবং তরকারি
যারা একদম ভাত না খেয়ে থাকতে পারবেন না এমন মানুষ হন তাহলে রাতের খাবারে শুধু ১ কাপ ভাত রাখুন আর তরকারি হিসেবে মিক্সড সবজির তরকারি আর সালাদ খাবেন বেশি করে। সাথে রাখবেন লেবু।আর মাছ মাংস কিংবা ডিম খেতে চাইলে কোনোটাই এক পিসের বেশি খাবেন না এবং রেড মিট যেমন বিফ কিংবা মাটন এরিয়ে চলুন।
৩. ওটস
রাতের হালকা খাবার কিন্তু অত্যন্ত পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার গুলোর মধ্যে ওটস কিংবা ওটমিল অন্যতম। ওটস হাই ফাইবার যুক্ত খাবার যা দ্রুত ক্ষুধা নিবারণ করে এবং খুব দ্রুত হজম হয়ে যায়।বাজারে বিভিন্ন ব্রান্ডের ভালো মানের ওটস পাওয়া যায়। ওটস আপনারা খিচুড়ি বানিয়ে কিংবা সেদ্ধ ওটস টকদই কিংবা দুধ এর সাথে মিশিয়ে বিভিন্ন ফল ও মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।যা অত্যন্ত পুষ্টিকর রাতের খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
৪. স্যুপ
সহজে পরিপাক হয় এমন একটা খাবার হলো স্যুপ।স্যুপ একাধারে হালকা এবং সহজপাচ্য বলে এটিকে রাতের খাবারের অন্তর্ভুক্ত করা যায়।রাতে আপনারা রুটি এবং ভাতের বদলে একবাটি স্যুপ খেতে পারেন। স্যুপ বিভিন্ন রকমের হতে পারে যেমন ভেজিটেবল স্যুপ,চিকেন স্যুপ ইত্যাদি। তবে রাতের জন্য ভেজিটেবল স্যুপ ভালো। সাথে ডিম কিংবা মুরগীর মাংশ অথবা অল্প তেলে ভাজা মাছ রাখতে পারেন। এটি অত্যান্ত পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ রাতের খাবার হবে।
৫. ছোলা
ছোলা ভুনা কিংবা ছোলার সালাদ উপাদেয় রাতের খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।ছোলায় উচ্চ মানের ফাইবার ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিন থাকে।যা সহজে হজম হয়। শরীরে পুষ্টি সরবরাহ করে।
৬. টকদই ও সালাদ
টকদই, বিভিন্ন সবজি এবং ফলের সালাদ তাড়াতাড়ি হজম হয়। তাই হালকা রাতের খাবার হিসেবে এসব আপনার খাবারের মধ্যে তালিকাভুক্ত করতে পারেন
৭. প্লেইন প্রোটিন
অনেকে অতিরিক্ত ওজন কমাতে ডায়েট করে থাকেন। যারা ডায়েট করেন তারা রাতের খাবারে শুধু প্রোটিন রাখতে পারেন।এটা হতে পারে হালকা তেলে রান্না করা মুরগির মাংশ কিংবা মাছ অথবা দুটি সিদ্ধ ডিম এবং কিছু বাদাম ভাজা।এটা সহজে হজম ও হয় এবং দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে।
রাতে যা খাবেন না
রাতের খাবারে অতিরিক্ত চর্বি ও তেল জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। কোমল পানীয়, চিনি জাতীয় খাবার এসব রাতে একদমই খাবেন না। অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার খাবেন না এটা আপনার ওজন দ্রুত বাড়িয়ে দেবে।
রাতে হালকা এবং সহজ পাচ্য খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। চেষ্টা করবেন রাতে হালকা খাবার খেতে এবং খাবারটা দ্রুত খেয়ে নিতে। তবে অবশ্যই রাতে খেয়ে ঘুমাবেন কখনই না খেয়ে ঘুমাবেন না এবং দেরি করে খাবেন না। দেরি করে খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বুক জ্বালাপোড়া করা, গলা জ্বালাপোড়া করা, মাথাব্যথা এবং ফুসফুসের প্রদাহ হতে পারে।এমনকি যদি আপনি দীর্ঘদিন রাতে দেরিতে খাবার খান এবং অতিরিক্ত তেল চর্বিযুক্ত খাবার খান তাহলে আপনার আলসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।তাই রাতে হালকা খাবার খান দ্রুত খাবার খান এবং সুস্থ থাকুন ।