ভুমিকম্প হলো একধরনের বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। মুলত বিভিন্ন কারণে ভূ পৃষ্ঠের উপরিভাগ কেপে ওঠা কে ভুমিকম্প বলে। ভুমিকম্প মুলত কয়েকটি প্রাকৃতিক ঘটনার কারণে হয়ে থাকে। এগুলো হলো মাটির নিচের টেকটোনিক প্লেটগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ, আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত,লাভা উদগীরণ, অত্যাধিক মাত্রায় জলপ্রবাহ, পাহাড় ধস ইত্যাদি কারণে হয়ে থাকে। ভুমিকম্পের মাত্রা যত বেশি হবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তত বেশি হবে।ভুমিকম্পের ফলে বড় বড় ভবন ধসে পড়ে,মাটিতে ভয়াবহ ফাঁটল সৃষ্টি হয় এমন কি নদীর গতিপথ পর্যন্ত পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে ভুমিকম্পের কারণে। ভুমিকম্পের ফলে অনেক সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি এবং বড় মাত্রায় প্রাণহানিও ঘটতে পারে।

ভুমিকম্পের মাত্রা কিভাবে নির্ণয় করা হয়?

ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ণয় করা হয় রিক্টার স্কেল ব্যবহার করে। এই স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা হিসাবে মাত্রিক ব্যবহার করা হয়, যেখানে ১ থেকে ৩.৫ মাত্রা ছোট, ৩.৫ থেকে ৭ মাত্রা মাঝারি, ৭ থেকে ৭.৫ মাত্রা বৃহত্তর। যেকোনো বৃহত্তর মাত্রার ভুমিকম্প আশংকাজনক মাত্রায় প্রানহানী ঘটানোর ক্ষমতা রাখে তাই ভুমিকম্পের সময় কিছু অবশ্য করণীয় নিয়মকানুন মেনে চললে ক্ষতির হাত থেকে বেচে যাওয়া সম্ভব।

ভুমিকম্প হলে করণীয়

চলুন দেখে নেয়া যাক ভুমিকম্পের সময় করণীয় কি কি…..

১. ভুমিকম্পের সময় দ্রুতই যথা সম্ভব ফাকা,উন্মুক্ত স্থানে আশ্র‍য় নিন।
২.যথা সম্ভব মাথা ঠান্ডা রাখুন, হতবিহ্বল হয়ে ছোটাছুটি করবেননা।
৩. যদি কোনো উঁচু দালানে আটকে পড়েন এবং নামতে পারেন তাহলে শক্ত কোন বিমের নিচে,কোনো টেবিল বা ডেস্ক এর নিচে অবস্থান করুন।ভঙ্গুর কোনো কিছুর পাশে থাকবেন না এতে আহত হবার সম্ভবনা থাকে।
৪. ভয় পেয়ে দালান থেকে লাফ দিয়ে নামার চেষ্টা করবেন না এতে প্রচন্ড আহত এবং প্রাণহানী হওয়ার আশংকা থাকে।
৫. একটা ভবনে অনেকজন আটকে পড়লে এবং নামার উপায় না থাকলে সবাই মিলে একস্থানে আশ্রয় না নিয়ে আলাদা আলাদা বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিন।
৬.ভুমিকম্পের সময় বহুতল ভবন থেকে নামার জন্য লিফট ব্যবহার করবেন না,লিফট ছিড়ে পড়ার আশংকা প্রবল থাকে এসময়।
৭. ভুমিকম্পের সময় নিজের মাথা ঢেকে রাখার চেষ্টা করুন,বাড়িতে থাকলে বালিশ কিংবা কাপড় দিয়ে মাথা বাচিয়ে রাখুন, বাইরে কিংবা অফিসে অবস্থান করলে কার্ডবোড কিংবা অন্য কোনো বস্তু দিয়ে শক্ত করে চেপে রাখুন।
৮.মোবাইলে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ,এম্বুলেন্স এসবের নাম্বার সংরক্ষন করে স্পীড ডায়ালে রেখে দিন দুর্যোগের সময় এটা আপনাকে দ্রুত উদ্ধার হতে সাহায্য করবে।
৯. ভুমিকম্পের সময় যদি আপনি কোনো গাড়িতে অবস্থান করেন চেষ্টা করবেন গাড়ি কোন ফাকা স্থানে দাড় করিয়ে ভুমিকম্প থামার অপেক্ষা করতে। ভুমিকম্প থেমে গেলে তারপর স্থান ত্যাগ করুন।
১০. একটা বড় মাত্রার ভুমিকম্পের পড়ে আরো কয়েকদফায় ছোট ছোট মাত্রার ভুমিকম্প হয় একে ‘আফটার শক’ বলে। তাই বড় মাত্রার ভুমিকম্পের পড়ে অন্তত এক ঘন্টা নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান করুন।

যদিওবা বড় ধরনের ভুমিকম্প অনেক বড় দূর্যোগের সৃষ্টি করে। এর ফলে অনেক ক্ষয়ক্ষতি এবং মানুষের প্রাণহানীর আশংকাও থাকে। তাই ভুমিকম্পের সময় যথাসম্ভব মাথা ঠান্ডা রেখে উপরে উল্লেখিত বিষয় গুলো মেনে চললে নিজেকে বিপদ মুক্ত রাখা সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *