গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না জেনে নিন
গর্ভাবস্থায় একজন মা ও শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে আজই সতর্ক হন গর্ভকালীন সময় কোন সবজিগুলা খাওয়া যাবে না। আপনি আপনার নিকটস্থ কোন গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন। তাই একজন যোগ্য মা হিসেবে অবশ্যই জানা উচিত গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না সে সম্পর্কে। একজন মায়ের সতর্ক তাই পারে সুস্থ সবল বাচ্চা জন্ম দিতে।
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না
গর্ভাবস্থায় নারীরা সবচেয়ে কঠিন সময় পার করে থাকেন। কেননা গর্ভাবস্থায় শেষের দিকটা একজন নারীর অনেক কিছু বেচে খেতে হয় এবং বুঝে শুনে চলতে হয়। গর্ভাবস্থায় যেমন কিছু সবজি খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায় তেমনি কিছু সবজি এড়িয়ে চলা উচিত। যদিও বেশিরভাগ সবজি খাওয়া নিরাপদ এর মধ্যে কিছু শাক ও সবজি রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় পরিহার করা উচিত।
১। করলা: করলা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও করলা গর্ভাবস্থায় এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ করলাতে থাকা গ্লাইকোলাইসিস, সেপোনিক, মারোডিসিন নামক পদার্থ থাকে যা গর্ভবতী নারীর ক্ষতির কারণ হতে পারে। এমনকি ক্ষতি হতে পারে গর্ভজাত সন্তানেরও।
২। শাক (রাসায়নিক যুক্ত শাক): গ্রীষ্ম ও শীতকালীন কিছু শাকপাতা যেমন: পালং শাক, মূলা শাক, লাল শাক, বা ডাটা শাক যেগুলোতে রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। এইসব শাক ভালো করে ধৌত করে রান্না করতে হবে না হলে এর মধ্যে থাকা কীটনাশক গর্ভবতী নারীর এবং শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
৩। কাচাঁপেপে: আমরা অনেকেই হয়তো কাঁচা বা আধা-পাকা পেঁপে খাই গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হলে। কাঁচা বা আধা-পাকা পেঁপেতে প্যাপেইন নামক একটি উপাদান থাকে, যা জরায়ুর সংকোচন ঘটাতে পারে এবং অকাল গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। পাকা পেঁপে অবশ্য নিরাপদ তাও গর্ভাবস্থায় এড়িয়ে চলা উচিত।
৪। সজনে ও সজনে পাতা: কাঁচা সজনে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ থাকলেও গর্ভাবস্থায় এটি এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ কাঁচা সজনে খেলে তা জরায়ুর সংকোচন ঘটাতে পারে একই কারণে সজনের পাতাও এড়িয়ে চলা উচিত।
৫। বেগুন: যদিও বেগুনের পুষ্টিগুণ ভালো, তাই অল্প করে খেতে পারেন। তবে বেগুনের মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা শরীরের উত্তাপ বাড়াতে পারে এবং জরায়ুর সংকোচন ঘটাতে পারে।
৬। আলু: পুরানো বা কেটে যাওয়া আলুতে সোলানিন নামক বিষাক্ত উপাদান তৈরি হতে পারে, যা গর্ভাবস্থায় শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
৭। অর্ধেক সিদ্ধ করা সবজি: গর্ভাবস্থায় অর্ধেক সিদ্ধ করা কিছু শাক ও সবজি যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রোকলি, পালং শাক ইত্যাদি না খাওয়াই ভালো। এইসব, শাক ও সবজি ভালোভাবে সিদ্ধ না করলে এতে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও টক্সিন দূর হয় না, যা গর্ভবতী নারীর পেট ফাঁপা ও গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। অর্ধেক সিদ্ধ করা শাক ও সবজি গর্ভবতী নারীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে যা গর্ভাবস্থায় পরিহার করা উচিত।
আরও পড়ুন: গর্ভাবস্থায় কি কি এড়ানো উচিৎ? জেনে নিন
গর্ভাবস্থায় নিরাপদ সবজি গ্রহণের উপায়
না দোয়া ফল ও সবজি: গর্ভাবস্থায় না ধোয়া ফল ও সবজি খাওয়া যাবে না। কেননা না ধোয়া ফল ও সবজি গুলোতে ক্ষতিকারক কীটনাশক থাকতে পারে।
ভালোভাবে ধোয়া: বাজার থেকে সবজি কিনা আনার পর ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে যাতে মাটি এবং ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ না থাকে।
সিদ্ধ বা রান্না করা: গর্ভাবস্থায় সবজি ভালোভাবে সিদ্ধ করে খাওয়া উচিত এতে করে সবজিতে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও প্যারাসাইট ধ্বংস হয়।
ফ্রিজে সংরক্ষণ: ফ্রিজে দীর্ঘদিন ফলমূল রেখে কোনোভাবেই খাওয়া যাবে না এবং ফ্রিজের পাতাওয়ালা সবজিগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে রান্না করতে হবে।
এগুলো ছাড়াও, গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের খাদ্য তালিকার ক্ষেত্রে সবসময় সচেতন থাকতে হবে। নতুন কোনো খাদ্য বা সবজি খাওয়ার আগে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত। আপনি বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে একটি খাদ্যের লিস্ট করে নিতে পারেন। আলহামদুলিল্লাহ, আপনারা গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না ভালো একটি ধারণা পেয়েছেন সুস্থ থাকুন।