দ্রুত ওজন বাড়ানোর উপায়

মাত্র ১০ দিনে ওজন বাড়াতে করণীয় কি জেনে নিন 

রোগা -পাতলা, চিকন স্বাস্থ্য কার‌ই কআম্য নয়। আমরা প্রত্যেকেই স্বাস্থ্যবান/স্বাস্থ্যবতী হতে চাই।কারণ আমাদের সমাজে মোটা হলে যেমন কটু কথা,অন্যের হাসির খোরাক হতে হয়, তেমনি অতিরিক্ত চিকন স্বাস্থ্যের যারা তাদের‌ও শুনতে হয় অনেক কটু কথা। আমাদের মধ্যে কেউ যদি চিকন হয় তবে বন্ধু মহল বা কলিগদের আড্ডায় প্রায়শই শুনতে হয় কিছু কমন কথা।যেমন তুমি এত শুকনা মা কি খেতে দেয় না, আবার কেউ বলে ও তো ধাক্কা দিলেই মক্কা যাবে, অথবা বাতাস আসলেই উড়িয়ে নিয়ে যাবে। কারও ইচ্ছা করে না এমন পরিস্থিতিতে পড়তে।তাই অনেকেই জানতে চান কিভাবে দ্রুত ওজন বাড়ানো যায়।

দ্রুত ওজন বাড়ানোর উপায় জানতে চাইলে জানতে হবে:

*কি খেলে বা কোন খাবারগুলো আমাদের ওজন বাড়াতে সহায়ক ।

*ওজন বাড়ানোর কোনো নির্দিষ্ট ঔষধ আছে কিনা ।

*কোন ভিটামিন বা সিরাপ খেলে দ্রুত ওজন বাড়ানো যায়।

সব বয়সের মানুষের জন্য এক‌ই ওজন হতে হবে এমন না। ওজন বাড়ানোর আগে আমাদের প্রত্যেকের জানা উচিত নিজের উচ্চতা কত।কারণ উচ্চতার সাথে ওজনের সম্পর্ক ওতপ্রোত ভাবে জড়িত।আর তাই উচ্চতা অনুযায়ী কার আদর্শ  ওজন কতটুকু তা জানতে হলে প্রয়োজন বডি মাস ইনডেক্স বা বিএম‌আই  সম্পর্কে জ্ঞান।বিএম‌আই হচ্ছে শরীরের আদর্শ ওজন নির্ণয়ের একটি গাণিতিক পদ্ধতি।বিএম‌আই এর মাধ্যমে আদর্শ ওজন নির্ণয়ের জন্য প্রথমে নিজের উচ্চতাকে সেন্টিমিটার এককে প্রকাশ করে তা থেকে ১০০ কে বিয়োগ করলে আদর্শ ওজন পাওয়া যায়।

আমাদের অনেকের কাছেই মনে হয় বা আমরা বিশ্বাস করি যে কার্বহাইড্রেড জাতীয় খাবার বেশি খেলে দ্রুত ওজন বাড়ানো যায়। কিন্তু না অতিরিক্ত কার্বহাইড্রেড জাতীয় খাবার বেশি খেলে শরীরের ক্ষতি হয়। তাই তো প্রথমেই জানতে হবে কিভাবে খাবার খেলে বা কোন খাবারগুলো আমাদের খাওয়া উচিত।

এ কথা সত্যি যে স্বাস্থ্যবান /স্বাস্থ্যবতী হতে গেলে খাওয়ার বিকল্প কিছু নেই। এজন্য দরকার নিয়ম মেনে সঠিক সময় খাদ্য গ্রহণ করা।

সকালের খাবার: ওজন বাড়ানোর জন্য প্রয়োজন সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস পানি পান করা খালি পেটে। এরপর সকালের নাস্তায় ডিম,পরোটা, সবজি খাওয়া। কারণ ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং সবজি ও পরোটায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও শর্করা। সম্ভব হলে গিয়ে ঘিয়ে

ভাজা পুরোটা খাওয়া যেতে পারে। এতে রয়েছে চর্বি ও ফ্যাট,যা ওজন বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

দুপুরের খাবার: দুপুরের খাবারে রাখা যেতে পারে ভাত ,মাছ-মাংস ,ডাল ও সবজি। তবে মাছের মধ্যে সামুদ্রিক মাছ রাখতে পারলে বেশি ভালো হয়। কারণ এতে করে প্রচুর ফ্যাট‌‌ ও আমিষের চাহিদা পূরণ করা যায়,যা ওজন বাড়াতে সহায়ক। এছাড়া দুপুরের খাবারে দুই বা আড়াই প্লেট ভাত খাওয়া যেতে পারে।ভাতে আছে শর্করা যা ওজন বাড়াতে সহায়ক। আবার ডাল খেলেও ওজন বাড়ে।

রাতের খাবার: রাতের খাবারেও ভাত মাছ-মাংস বা সবজি খাওয়া যেতে পারে,সেই সাথে এক গ্লাস দুধ।

এছাড়াও ওজন বাড়াতে কার্বোহাইড্রেট, শর্করা, প্রোটিন, ভিটামিন, চর্বি,আমিষ, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ ফলমূল সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। ওজন বাড়ানোর জন্য একজন মানুষের তার উচ্চতার অর্ধেক লিটারের পানি পান করা উচিত।

ওজন কমাতে যেমন ব্যায়াম করা হয় তেমনি ওজন বাড়ানোর জন্য ও ব্যায়াম করা উচিত। কারণ ব্যায়াম করলে হজম প্রক্রিয়া ভালো হবে, ফলে ক্ষুধা বাড়বে।

ওজন বাড়ানোর জন্য অবশ্যই যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তা হচ্ছে ঘুম।স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। কারণ ভালো ঘুম না হলে কিছুই ভালো লাগে না যা প্রথমে মানসিক ক্ষতি করে পরে শারীরিক ক্ষতি করে।

আমরা অনেকেই মনে করি জাঙ্ক ফুড বা স্ট্রীট ফুড খেলে হয়তো ওজন বাড়ে। মনে রাখতে হবে এসব খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে এসব এড়িয়ে চলাই ভালো।

আমাদের অনেকেই আছি যারা ওজন বাড়াতে বিভিন্ন ঔষধ সেবন করে থাকি,যা পরবর্তীতে আমাদের স্বাস্থ্যহানি ঘটাতে পারে। তাই ওজন বাড়ানোর জন্য যদি কোন ঔষধ সেবন করতেই হয় তবে তা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা উচিত।

পরিশেষে বলা যায়, ওজন বাড়াতে হলে প্রয়োজন নিজেকে নিয়মানুবর্তী করে তোলা। সময় মতো খাবার খাওয়া। ওজন বাড়াতে গিয়ে নিজের স্বাস্থ্য ঝুঁকি হতে পারে এমন কিছু না করা। নিজেকে সদা প্রাণবন্ত রাখার চেষ্টা করা। কারণ কথায় আছে,”স্বাস্থ্য সকল সুখের মূল “ ।আর মন ভালো থাকলে শরীর‌ও ভালো থাকে। তাই অন্যের কথায় কষ্ট পেয়ে ওজন বাড়াতে গিয়ে নিজের ক্ষতি হবে এমন কিছু করা যাবে না।

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *