৩ লক্ষ টাকার মধ্যে ভালো বাইক, ৩ লক্ষ টাকার মধ্যে বাইকের দাম
বর্তমানে গ্রাহকদের চাহিদা ও উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন কোম্পানি নিত্য নতুন মডেল ও আকর্ষণীয় ডিজাইনের বাইক বাজারে আনছে। এই নিত্য নতুন মডেলের বাইক গুলো সাধারণত ১৫০ সিসির উপরে। আর আমরা সবাই জানি যে ১৫০ সিসির উপরে যে বাইকগুলো আছে সেগুলোর দাম একটু বেশি হয়ে থাকে। তো অনেকেই আছেন যারা তিন লক্ষ টাকা বাজেটের মধ্যে বাইক খুজে থাকেন। কিন্তু মন মতো বাইক খুঁজে পান না। আজকে আমরা আলোচনা করব তিন লক্ষ টাকার মধ্যে ভাল বাইক। তিন লক্ষ টাকার মধ্যে বাইকের দাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনারা আমাদের আর্টিকেলটি সম্পন্ন ভালোভাবে পড়ুন এবং জেনে নিন ৩ লক্ষ টাকার মধ্যে ভালো বাইক কি কি –
৩ লক্ষ টাকার মধ্যে ভালো বাইক
ইয়ামাহা
বর্তমানে গ্রাহক চাহিদা ও যুগের সাথে তাল মিলিয়ে Yamaha band যুগোপযোগী আকর্ষণীয় ডিজাইনের অনেক বাইক বাজারে এনেছে। যেগুলোতে উন্নত প্রযুক্তি ও লং লাস্টিং সার্ভিস এবিলিটি ব্যবহার করা হয়েছে। আমাদের দেশে ইয়ামাহা ব্রান্ডের জনপ্রিয়তা দিন দিন কিন্তু বাড়তেই আছে। ৩ লক্ষ টাকার মধ্যে ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের ৩ টি ভালো বাইক আছে।
- Yamaha FZS V2 150cc – দাম– ২,৩২,০০০টাকা
- Yamaha FZS V3 150cc– দাম– ২,৫৫,০০০ টাকা
- Yamaha fazer FI v2 150cc – দাম– ২,৯৮,০০০টাকা
Yamaha FZS V2 150cc বাইকটি ৪স্ট্রোক ২ ভালভ SOHC ইঞ্জিন বিশিষ্ট একটি বাইক। বাইকটির আকর্ষণীয় ডিজাইন ও উন্নত প্রযুক্তির ইঞ্জিন ব্যবহার হওয়ার কারণে এর গ্রাহক সংখ্যা প্রচুর। ১৫০ সিসির বাইকটির স্পিড ১০৯ কিলোমিটার এক ঘন্টায়। এ ছাড়া বাইকে আছে টুইন ডিস্ক ব্রেকিং সিস্টেম। এছাড়া বাইক টি দিচ্ছে ৪৫ কিলোমিটার পার মাইলেজ সুবিধা। উন্নত প্রযুক্তি ও আকর্ষণীয় ডিজাইনের কারণে কমিউটার সেগমেন্টে বাইকটির দর্শন জনপ্রিয়তা প্রচুর এবং এর চাহিদাও প্রচুর। বাংলাদেশের বাজারে বাইকটির দাম মাত্র ২ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা।
এয়ার কুলেড ৪ স্ট্রোক ইঞ্জিন বিশিষ্ট বাইক ইয়ামাহা এফ জেড এস ভি থ্রি। বাইকটিতে আছে এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম, ইলেকট্রিক স্টার্টিং মোড ও অন্যান্য আকর্ষণীয় ফিচার। যখন ইয়ামাহা ভার্সন ২ বাজারে প্রচুর পরিমাণে প্রশংসা পায়, তখনই yamaha ব্র্যান্ড গ্রাহকদের সারপ্রাইজ হিসেবে ভার্সন থ্রি নিয়ে আসো। পরবর্তীতে ভার্সন থ্রী ভালোই জনপ্রিয়তা পায়।
Yamaha Fazer FI v2 বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ব্লু কোর সিঙ্গেল সিলিন্ডার বিশিষ্ট ইঞ্জিন। বাইকটি এক লিটার তেলে সর্বোচ্চ ৪৫ কিলোমিটার রান করতে পারে এবং এক ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১৩৫ কিলোমিটার স্পিডে যেতে পারে। দুর্দান্ত ডিজাইন ও সার্ভিস মান ভালো হওয়ার জন্য বাজারে বাইকটির চাহিদা প্রচুর পরিমাণ। এক কথায় তিন লক্ষ টাকার মধ্যে বাইকটি অত্যন্ত ভালো মানের বাইক।
সুজুকি
জাপানিজ ব্র্যান্ড suzuki অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশে সফলভাবে ব্যবসা করে আসছে। সুজুকির বাইকগুলো যেমন জনপ্রিয়তা লাভ করেছে তেমনি এই বাইকগুলোর চাহিদা প্রচুর পরিমাণে। বাইকগুলোর নেকেড স্পোর্টস ডিজাইন ও অসাধারণ কালারিং এর জন্য যে কেউ এই বাইকগুলো পছন্দ করবে। বাজারে সুজুকির ১৫০ সিসির অনেক বাইক আছে। ২০২৩ সালে তিন লক্ষ টাকার মধ্যে যে বাইক গুলো আছে সেই বাইকগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করব।
- Suzuki gixxer carburetor – –দাম: ২,২৪,০০০ টাকা
- New Suzuki gixxer – –—-দাম: ২,৩৬,০০০ টাকা
- Suzuki gixxer ABS–—– দাম: ২,৬৬,৯৫০ টাকা
- Suzuki gixxerSF special edition-দাম:২,৯৩,৯৫০ টাকা
- Suzuki gixxer SF Fi Disc– –—দাম: ২,৯৭,০০০ টাকা
- New Suzuki gixxer SF carburrtor– দাম: ২,৯৭,৫০০ টাকা
৩ লক্ষ টাকার মধ্যে suzuki ব্র্যান্ডের জিক্সার সিরিজ এবং এস এফ সিরিজের দুর্দান্ত বাইকের নাম উপরে দেয়া হয়েছে। সুজুকি ব্র্যান্ডের বাইকগুলো আসলে ডিজাইন ও স্টাইলিং এ অসাধারণ। তেমনি পারফরমেন্সে হার্ড হিটার। নিউ সুজুকি জিক্সার বাইকটি খুব ভালো মানের মাইলেজ প্রদান করে। বাইকটি এক লিটার তেলে ৪৫ কিলোমিটার চলে। ১৫৫ সিসি এবং ডাবল ডিস্ক এর এই বাইকটির ওজন ১৪১ কেজি। বাইকটি ৪ সাইকেল এবং ১ সিলিন্ডার বিশিষ্ট বাইক।
সুজুকি জাপানী ব্র্যান্ড হওয়ায় এর প্রতি মানুষের চাহিদা একটু বেশি। কারণ জাপানি কোন জিনিসের লং লাস্টিং সার্ভিস সম্পর্কে মানুষ ভালোভাবে জানে। সুজুকি জিক্সার এস এফ এফ আই এর কথা যদি একটু বলি, বাইকটি অত্যন্ত ভালো মানের এবং দুর্দান্ত ডিজাইনের একটি বাইক। বাইকটি ওয়ান সিলিন্ডার এয়ার কুলার ইঞ্জিন বিশিষ্ট বাইক। যদি ড্রাইভিং এ রেসিংয়ের ফিল আনতে চান এবং ড্রাইভিং কে উপভোগ করতে চান তাহলে এই বাইকটি যথেষ্ট। বাইকটির রয়েছে মসৃণ সিটিং পজিশন এবং এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম। ৩ লক্ষ টাকার মধ্যে suzuki ব্র্যান্ডের এই বাইকগুলো আপনার জন্য হবে একদম পারফেক্ট। লং লাস্টিং ক্যাপাসিটি পেতে হলে, সার্ভিস ভালো পেতে হলে, ড্রাইভিং রেসিং এ-র স্বাদ পেতে হলে শুধু কি ব্র্যান্ডের বাইকগুলো হবে দুর্দান্ত।
টিভিএস
বাংলাদেশের বাজারে আরেকটি জনপ্রিয় প্রিয় ব্রান্ড হলো টিভিএস। ইন্ডিয়ান কোম্পানির এই টিভিএস অনেকদিন ধরেই সফলভাবে বাংলাদেশের বাইকের উৎপাদন করে যাচ্ছে। সনি র্যাংস গ্রুপ বাংলাদেশে tvs এর বাজারজাত করে। টিভিএস ব্র্যান্ডের বাইকগুলো খুব ভালো এবং ৩ লক্ষ টাকার মধ্যে টি ভি এস ব্যান্ডের কিছু অত্যাধুনিক পাইপ পাওয়া যায় –
- TVS Apache RTR 160 ABS——দাম: ২,০৪,৯৯০ টাকা
- TVS Apache RTR 160 4V DD—দাম: ২,১৯,৯৯০ টাকা
- TVS Apache RTR 160 4V ABS – দাম: ২,৩৯,৯৯০ টাকা
টিভিএস ব্র্যান্ডের আরটিআর সিরিজের এই বাইকগুলো দর্শকদের মন জয় করেছে। কারণ এগুলোর অসাধারণ পারফরমেন্স, আকর্ষণীয় কালারিং, ডিজাইন ও শক্তিশালী এবিএস ব্রেকিং সিস্টেমের কারণে দীর্ঘদিন থেকেই গ্রাহক জনপ্রিয়তা শীর্ষে। তিন লক্ষ টাকার মধ্যে খুব ভালো মানের বাইক এগুলো।
টিভিএস অ্যাপাচি আরটিআর ১৬০ ফোর ভি বাইকটি দুর্দান্ত ইঞ্জিন বিশিষ্ট একটি। বাইকটিতে স্মার্ট এক্স এবিএস সিস্টেম ব্যবহৃত হয়েছে। বাইকটির প্রতি লিটার তেলে ৪৫ কিলোমিটার সার্ভিস দিতে পারে। এছাড়া এক ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১১৩ কিলোমিটার দূরত্ব ভ্রমণের স্বাদ দিতে পারে। ইঞ্জিন ডিসপ্লেসমেন্ট ১৬০ সিসির এই বাইক গুলোর নানা রকম সুবিধার জন্য দিন দিন চাহিদার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে।
বাজাজ
ভারতীয় আর একটি জনপ্রিয় ব্রান্ড হলো বাজাজ। বাজাজ এর ইতিহাস সবারই জানা। বাজাজ কোম্পানির বাইক এর জনপ্রিয়তা সেই অনেক আগে থেকেই। এমন একটা সময় ছিল যখন কাউকে জিজ্ঞেস করা হতো ভালো ব্র্যান্ড কোনটি সবাই এক কথায় উত্তর দিত বাজাজ ব্রান্ড। গ্রাহক চাহিদার কথা চিন্তা করে বাজাজ ব্রান্ড নতুন সালে বেশ কিছু ভালো মানের বাইক বাজারে এনেছে। ৩ লক্ষ টাকার মধ্যে বাজাজ ব্র্যান্ডের কয়েকটি বাইক আছে-
- Bajaj Pulsar 150 twin disc– –দাম: ২,০৫,০০০ টাকা
- Bajaj Pulsar NS 160(DD) ABS—দাম: ২,০৬,০০০ টাকা
- Bajaj Pulsar 150 ABS —– দাম: ২,১৫,৯০০ টাকা
- Bajaj Avenger ABS—- দাম: ২,৭৪,০০০ টাকা
- Bajaj Pulsar N 160 —-দাম: ২,৬০,০০০ টাকা
- Bajaj Pulsar NS 160 Fi ABS––দাম: ২,৬২,৫০০ টাকা
বাজাজ পালসার সিরিজের বাইকগুলো বহুদিন থেকে দর্শক জনপ্রিয়তা পেয়ে আসছে। এর সাথে বর্তমানে যুক্ত হয়েছে বাজাজ এভেঞ্জার। ৩ লক্ষ টাকার মধ্যে বাজাজ অ্যাভেঞ্জার বাইকটি আপনার জন্য হবে পারফেক্ট। 160cc বাইকটির পাওয়ার অত্যন্ত বেশি। বাইকটিতে যুক্ত আছে শক্তিশালী এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম। বাইকটি ঘণ্টায় 100 কিলোমিটার বেগে চলতে পারে। এছাড়া বাজাজ পালসার এন ১৬০ এবং বাজাজ পালসার এনএস ১৬০ এবিএস বাইক দুটির লং লাস্টিং খুবই ভালো। অসাধারণ কালারিং এবং আকর্ষণীয় ডিজাইনের কারণে বাইকগুলো গ্রাহক চাহিদার শীর্ষে। এগুলো ৩ লক্ষ টাকার মধ্যে সেরা বাইক।
হোন্ডা
জাপানিজ আর একটি অন্যতম ব্রান্ড হলো হোন্ডা। হোন্ডা কোম্পানির বাংলাদেশের বাজারে সর্বোচ্চ ১৬৫ সিসির বাইক আছে। হোন্ডা কোম্পানির বাইকগুলো বহুদিন ধরেই ইয়ং জেনারেশনের চাহিদার শীর্ষে। তিন লক্ষ টাকার মধ্যে বাজারে হোন্ডা কোম্পানির তিনটি ভালো বাইক পাওয়া যায়-
- Honda x-blade abs— –—দাম: ২,১৪,৫০০ টাকা
- Honda Activa 125 FI——দাম: ২,২৫,০০০ টাকা
- Honda CB hornet 160R ABS—দাম: ২,৫৫,০০০ টাকা
আপনার বাজেট যদি ৩ লক্ষ টাকা হয় তাহলে এই তিন লক্ষ টাকায় সবচেয়ে ভালো হবে হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০ আর এ বি এস। যখন হোন্ডা সিবি হরনেট ১৬০R দেশে অনেক দর্শক জনপ্রিয়তা পায় ঠিক তখনই গ্রাহকের সারপ্রাইজ হিসেবে এবং গ্রাহকদের নতুন অভিজ্ঞতা দিতে হোন্ডা কোম্পানি হরনেট ভার্সনের এবিএস কে বাজারে নিয়ে আসে। মাসকুলার ডিজাইন এবং অসাধারণ ফিচারের কারণে বাইকটি এখন সবার পছন্দের শীর্ষে।
বেনেলি
বেনেলি বাইকের সাথে আমরা হয়তো অনেকেই অপরিচিত। কিন্তু বাজারে বেনেলি ব্রান্ডের অনেক বাইক পাওয়া যায়। ৩ লক্ষ টাকার মধ্যে বেনেলি কিছু ভালো বাইক –
- Benelli TNT 165s— দাম: ২,২৫,০০০ টাকা
- Benelli 165s —–দাম: ২,২৫,৫০০ টাকা
বেনেলিটি টিএনটি ১৬৫ এস বাইকটি মূলত স্পোর্টস ক্যাটাগরির বাইক। ইঞ্জিন ডিসপ্লেসমেন্ট ১৬৫ সি সি। বাইকটিতে এয়ার কুলেট সিংগেল সিলিন্ডার বিশিষ্ট ইঞ্জিন ব্যবহৃত হয়েছে। প্রতি লিটার তেলে বাইকটি ৪৫ কিলোমিটার সার্ভিস দিতে পারে। বাইকের সর্বোচ্চ স্পিড এক ঘন্টায় ১২০ কিলোমিটার। বাইকটিতে যুক্ত আছে সব আধুনিক প্রযুক্তি। এছাড়া বাইকের অত্যাধুনিক ডিজাইন ও মনোরম কালারিং এর জন্য যে কেউ বাইক গুলো পছন্দ করবে। বাইকগুলোতে যুক্ত আছে ইলেকট্রিক স্টার্টিং মোড।
এছাড়া বাজারে ৩ লক্ষ টাকার মধ্যে আপনি আরও বিভিন্ন ধরনের বাইক কিনতে পারবেন:
- Lifan KPR 165R CBS — দাম: ২,০৪,০০০ টাকা
- Lifan KPR 165R Fi — দাম: ২,১৫,০০০ টাকা
- Speeder big monster 165 Fi– – দাম: ২,০৪,৯৯৯ টাকা
- GP-2 Predator 150 cc —দাম: ২,৯৬,০০০ টাকা
- Lifan KPT 150 ABS– দাম: ২,৭৫,০০০ টাকা
- GP-1 Naked Sports 150cc— দাম: ২,৯৯,০০০ টাকা
- Lifan KPT 150— – দাম: ২,৬০,০০০ টাকা
- Aprilia cafe 150— দাম: ২,৮৯,৫০০ টাকা
- Aprilia Terra 150— দাম: ২,৯২,০০০ টাকা
- Kawasaki KSR PRO 110– দাম: ২,২০,০০০ টাকা।
৩ লক্ষ টাকার মধ্যে এইসব বাইক আপনারা কিনতে পারবেন। আপনাদের আঞ্চলিক শোরুম বা জেলা শহরের শোরুম গুলোতে বাইকগুলো পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন