আসল কালিজিরার তেল চেনার উপায়

প্রথমে, আসল কালোজিরার তেল চেনাটা বড় কষ্টকর কারণ এর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের উপাদান মিশ্রিত থাকতে পারে। এই তেল চেনার একটি ঘরোয়া উপায় আছে। কালোজিরার তেল পরীক্ষা করার জন্য প্রথমে আপনার একটি গ্লাস অথবা মগ ও চামচ লাগবে। প্রথমে পাত্রটিতে এক চামচ তেল দিন তারপর পাত্রটির মধ্যে অর্ধেক পানি দিন এবং কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করুন। কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করার পরে যদি পানির রঙের কোন পরিবর্তন না হয় তাহলে বুঝবেন সেটি খাঁটি কালোজিরার তেল।  আর যদি পানির রং পরিবর্তন হয় এবং কালচে আকার ধারণ করে তাহলে বুঝবেন সেটি নকল। 

কালোজিরার তেল কোথায় পাওয়া যায়

এছাড়াও, এই তেল আপনারা যে কোন আয়ুর্বেদিক দোকানে পাবেন অথবা ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে খুঁজলেই পেয়ে যাবেন। আজকাল তো সবকিছুই আছে আমাদের হাতের নাগালে যেমন অনলাইন আপনি যদি অনলাইনে সার্চ করেন তাহলে দারাজ ও বিভিন্ন ধরনের ই-কমার্স ওয়েবসাইট পাবেন। সেখান থেকে অর্ডার করতে পারেন কালোজিরার তেল।

কালোজিরার তেল বানানোর ঘরোয়া নিয়ম

ঘরোয়া পদ্ধতিতে কালোজিরার তেল তৈরি করা খুবই কষ্টকর। কেননা আজকাল বাজারে আয়ুর্বেদিক দোকানে অনলাইনে এই তেল পাওয়া যায় চাইলে আপনি অর্ডার করতে পারেন। অথবা আপনি যদি খাঁটি বিশুদ্ধ কালোজিরার তেল তৈরি করতে চান তাহলে এই পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করতে পারেন।

  • প্রথমে কালোজিরার দানা গুলো (250গ্রাম অথবা আপনার ইচ্ছামত) অল্প আগুনের উত্তাপে ভেজে নিন। 
  • ভাজা হয়ে গেলে খুব অল্প পরিসরে মিহি না করে বেটে নিন সব বাটা হয়ে গেলে পুনরায় আবার বেটে নিন চটচটে না হওয়া পর্যন্ত।
  • তেল চটচটে হয়ে গেছে কিনা একবার হাত দ্বারা পরীক্ষা করে নিবেন।
  • তারপরে বাটা কালোজিরা সাথে খাঁটি আখের চিনি (যা দেখতে লালচে রঙের) দুই চামচ চিনি মিশ্রিত করুন (250 গ্রাম) বাটা কালোজিরার সাথে (যদি খাঁটি আখের লালচে রঙের চিনি না পান তাহলে সাধারন চিনি মিশিয়ে হবে )
  • মেশানোর পর চুলায় অল্প আগুনে 5 মিনিট রেখে দিতে হবে।
  • তারপর চুলা থেকে নামিয়ে দুই থেকে তিন চামচ পানি মিশিয়ে ভালোভাবে নাড়ুন এবং অল্প আগুনে (15 মিনিট) আবার অল্প পরিমান তাপ দিন।
  • ½ ঘন্টা পর ঠাণ্ডা হলে একটা পরিষ্কার কাপড় ও বাটি নিন এবং বাটির উপরে কাপড়টি রাখুন এবং পাত্রের কালোজিরা গুলো কাপড়ের উপরে ডেলে দিন (পুটলি বানিয়ে নিন )
  • খুব জোরে চাপতে থাকুন এবং চাপ দেওয়া শেষ হলে কালোজিরা গুলো অন্য পাত্রে রাখুন।
  • যে তেল বের হয়েছে এই তেলের সাথে পানি মিশ্রিত রয়েছে এই মিশ্রিত পানি দূর করার জন্য এই তেলটুকু রোদ্রে রেখে দেন।  অথবা চুলায় অল্প পরিমান তাপ দিন যাতে পানি জলীয়বাষ্প আকারে উড়ে যায়।

এই পদ্ধতিতে আপনি ঘরোয়াভাবে কালোজিরার তেল বানাতে পারেন।  তবে আজকাল বাজারে কালোজিরা তেল পাওয়া যায় যা মেশিন দ্বারা তৈরি।

রূপচর্চায় কালোজিরার তেল

এছাড়াও, স্বাস্থ্যের পাশাপাশি রূপচর্চায়ও কালোজিরা তেলের উপকারিতা অপরিসীম নিম্নে এর উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে:

মুখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে: মুখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে কালোজিরা তেল ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে মুখে মেখে এক ঘণ্টা পর সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলন এটি সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে কার্যকারী। 

ত্বকের যত্নে কালোজিরার তেল

ত্বকের যত্নে এই তেলের উপকারিতা অপরিসীম নিয়মিত এই তেল ব্যবহার করলে ত্বকে থাকা বিভিন্ন জীবাণু ধ্বংস হয়। এই তেল শরীরে মালিশ করার আগে গোসল করে নিন শরীর ভালো করে ধৌত করে তারপরে তেল মালিশ করুন। এই তেল ত্বকের বিভিন্ন ক্ষতিকর জীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। 

চুলের যত্নে কালোজিরার তেল

আজকাল দেখা যায় অল্প বয়সে চুল পড়া চুলের গোড়ায় বিভিন্ন জীবাণুর যেমন সোরিয়াসিস ও বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ। এতে মাথায় খুশকি চুলের গোড়ায় ত্বক শুকিয়ে যায় ফলে চুল পড়া বৃদ্ধি পায় এর অন্যতম কারণ হলো চুলের গোড়ায় পুষ্টি ঠিকমতো না পাওয়া, চুল দুর্বল হওয়া, চুলের আগা ফেটে যাওয়া অবশেষে টাক সমস্যায় পরিণত হওয়া। 

এই সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য নিয়মিত চুলের যত্ন নেওয়া যেমন চুলে কালোজিরার তেল, অ্যালোভেরা, নারিকেল তেল, পেঁয়াজের রস লেবুর রস অল্প পরিমাণ চিনি ইত্যাদি উপাদানগুলো সঠিক নিয়মে চুলের গোড়ায় মালিশ করলে চুল পড়া বন্ধ হয়।  চুলে পুষ্টি গুণ বৃদ্ধি পায় চুল ঘন হয় এবং টাক সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। এছাড়াও, আপনি যদি লেবুর রস ও তেল মিশ্রিত করে চুলের গোড়ায় ভালোভাবে মালিশ করেন তাহলে লেবুতে থাকা ভিটামিন সি চুলের পুষ্টি বৃদ্ধি করে চুল পড়া রোধ করে। এবং বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *