বন্ধু এমন একটি শব্দ যা ছোট হলেও এর বিস্তৃতি ব্যাপক। সময় অসময়ের সাথী, সুখ দুঃখের সাথী, স্কুল পালানোর সাথী সেই তো বন্ধু। বন্ধু বা বন্ধুত্ব এমন একটা জিনিস যার সাথে সমস্ত সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করা যায়, বিপদের সময় যাকে পাশে পাওয়া যায়, অকোপটেই নিজের মনের সব কথা যাকে বলে ফেলি। তবে বন্ধুত্বের মধ্যে কিছু কিছু কথা আছে যেটা একান্তই গোপন। বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখতে, বন্ধুত্বের সম্পর্ক মজবুত রাখতে সেসব কথা কখনোই বলা উচিত নয়। আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় হলো প্রিয় বন্ধুকে যেসব কথা বলা যাবে না তা নিয়ে। তো যারা এ বিষয়ে জানেন না তারা আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। চলুন তাহলে শুরু করা যাক –

১। অতি গোপনীয় তথ্য বলা যাবে না-

বন্ধু যতই প্রিয় হোক না কেন বন্ধুত্বে একটা লিমিটেশন রাখা দরকার। বন্ধুত্বের মধ্যে বিভিন্ন কথা ভাগাভাগি করা ভালো তবে অতি গোপনীয় তথ্য বলা যাবে না। আপনি বা আমি কোন গ্যারান্টি দিতে পারবো না যে একটা বন্ধুত্ব চিরজীবন থাকবে, কোনদিন নষ্ট হবে না। হতেও পারে কোন  কারনে বন্ধুত্বটা নষ্ট হয়ে গেলো। তখন আপনাকে ঘায়েল করার অস্ত্রই হলো সেই গোপনীয় তথ্য। তাই এই ব্যাপারে লিমিট রাখতে হবে। 

২। পোশাকের সমালোচনা না করা 

নিশ্চয়ই পোশাক মানুষকে সুন্দর করে তবে পোশাকের ক্ষেত্রে একেক জনের পছন্দ একেক রকম হয়ে থাকে। এছাড়া ধনী গরিবের পার্থক্যের তারতম্যে পোশাকেরও তারতম্য হয়ে যায়। বন্ধুত্বের মধ্যে হাসি তামাশা হালকা খুনসুটি হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে কোনো বন্ধুর পোশাক নিয়ে সমালোচনা করা যাবে না। এতে করে সেই বন্ধুটি মনে কষ্ট পাবে এবং বন্ধুত্ব নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। 

৩। শারীরিক গঠন নিয়ে সমালোচনা না করা 

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। এই সেরা জীবের মধ্যে একেক জনের গঠন একেক রকম। আমাদের প্রত্যেকের বন্ধুদের মধ্যে কেউ লম্বা , কেউ খাটো, কেউ কালো, কেউ ফর্সা, কেউ শ্যামলা, কেউ বা চিকন,  আবার কেউ বা মোটা। এরকম বিভিন্ন দৈহিক গঠন থাকে। বন্ধুদের তাদের শারীরিক গঠন নিয়ে বেশি মজা করা উচিত নয়। এতে করে সে মনে প্রচন্ড আঘাত পায় এবং আস্তে আস্তে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। 

৪। সঙ্গীর খারাপ মন্তব্য না করা 

বন্ধুর সঙ্গী সম্পর্কে কখনো খারাপ মন্তব্য করা উচিত নয়। যতই ভালো বন্ধুত্ব হোক না কেন যখন বন্ধুর সঙ্গী নিয়ে খারাপ মন্তব্য করা হয় বা সমালোচনা করা হয় তখন সেই বিষয়টা আসলে ভালো চোখে দেখার মতো না। যখন কোন বন্ধুর সঙ্গী সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করবেন তখন সেই বন্ধুর সঙ্গে আপনার সম্পর্কে ফাটল ধরবে। তাই এটা করা যাবে না। 

৫। পরিবারের সমালোচনা না করা 

একজন মানুষের সবচেয়ে আপনজন হচ্ছে তার পরিবার। কিন্তু যখন কেউ তার পরিবারের সমালোচনা করে তখন সে সেটা মেনে নিতে পারে না আমাদের বন্ধুদের মধ্যে একেকজনের পরিবার একেক রকম। তাই কখনোই  বন্ধুর পরিবার বা পরিবারের লোকজনকে নিয়ে সমালোচনা করবেন না।  আপনার কাছে হয়তোবা এটা হাসি ঠাট্টা তামাশা কিন্তু আপনার বন্ধু সেটা মেনে নিতে নাও পারে। তার কাছে বিষয়টা সম্মানহানি বা আপত্তিকর হতে পারে। 

৬। অন্যকে নিয়ে অতিরিক্ত মজা না করা 

বন্ধুরা যখন একসঙ্গে বসে থাকে বা চলাফেরা করে তখন তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয়,  বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হাসি ঠাট্টা হয়, কিন্তু কখনোই লিমিট অতিক্রম করা উচিত নয়। আজকে আপনারা দুইজন বন্ধু মিলে মজা করার উদ্দেশ্যে তৃতীয় জনের সমালোচনা করলেন। কাল নয়তো পরশু দেখবেন তারা দুই বন্ধু মিলে আপনার সমালোচনা করতেছে। তো বন্ধুত্বের মধ্যে কাউকে নিয়ে অতিরিক্ত মজা না করা বা সমালোচনা না করাই ভালো।

মন্তব্য:

আমাদের আলোচনার মূল বিষয় ছিল প্রিয় বন্ধুকেও যেসব কথা বলবেন না। আশা করি আমাদের আলোচনার মাধ্যমে আপনারা বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। বন্ধু অমূল্য সম্পদ, আশা করি বন্ধুত্বে অটুট থাকবেন। ধন্যবাদ। 

সম্পর্ক নিয়ে আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *