আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি তখন আমাদের মস্তিষ্ক স্মৃতি ও তথ্য সংরক্ষণ করতে থাকে। শরীরের ক্ষতিকর উপাদান সরিয়ে ফেলে। যাতে রাতে ঘুম থেকে জাগার পর শরীর ঠিকঠাকভাবে কাজ করতে পারে। ঘুমানোর ফলে ”লিভিং অর্গানিজম” ঘটে। লিভিং অর্গানিজম হচ্ছে তা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কিন্তু ঘুম কম হলে এই লিভিং অর্গানিজম ঘটে না। কারণ ঘুম আমাদের শরীরের ক্ষতিপূরণ ও দেহে শক্তি সঞ্চয় এর একটি পন্থা। ঘুমের সময় মস্তইষ্ক নিস্ক্রিয় থাকে। তবে শরীর নড়াচড়া করতে পারে। এই সময় মস্তিষ্ক থেকে কিছু হরমোন নিঃসরণ হয় দিনের ক্লান্তি দূর করে।

ঘুম কি?

ঘুম সম্পর্কে যদি বলতে হয় , ঘুম হচ্ছে একজন মানুষ বা প্রাণীর দৈনন্দিন ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার একটি প্রক্রিয়া। প্রতিটি সুস্থ মানুষের জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত ও আরামদায়ক একটি ঘুম।পর্যাপ্ত ঘুম একজন কর্মজীবি মানুষকে ফিরিয়ে দেয় মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা। মস্তিষ্ককে করে তোলে সতেজ ও স্বতঃস্ফূর্ত।

কম ঘুমের ফলে মানসিকভাবে ও শারীরিকভাবে যেসব ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়:

চিকিৎসা ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত সঠিক মাত্রায় ঘুম না হলে একজন মানুষ ক্রমাগত মানসিকভাবে ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

  • একটানা কয়েক রাত না ঘুমিয়ে জেগে থাকলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমনকি যাদের ডায়াবেটিস আছে তা অতি মাত্রায় বেড়ে গিয়ে মৃত্যুও ঘটাতে পারে।
  • মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।
  • প্যানিক , ফোবিয়া তৈরি হয় তার ফলে উদ্বিগ্নতা ও বিষন্নতা বেড়ে যায়।
  • মানসিক অস্থিরতা তৈরি হয়।
  • স্নায়ুজনিত সমস্যা তৈরি হয়।
  • নিদ্রাহীনতা রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমিয়ে শরীরের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়।
  • সঠিক ঘুম না হলে হার্ট অ্যাটাক, অকাল মৃত্যু,স্ট্রোক এর মাত্রা দশগুণ বেড়ে যায়।
  • মানসিক সমস্যার কারণে পারিবারিক শান্তি নষ্ট হয়।

আরও পড়ুন: রাতে দেরিতে ঘুমালে কি হয়? ৭টি জটিল সমস্যা জেনে নিন

তাড়াতাড়ি ঘুমানোর কিছু উপায়

ঘুমের বিকল্প নেই।তাই সুন্দর ঘুমের জন্য যেমন প্রয়োজন মানসিক শান্তি তেমন প্রয়োজন একটি আরামদায়ক পরিবেশ।তাই প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে ঘুমানোর স্থানটি পরিষ্কার ও নিরিবিলি কিনা।কারণ ঘুমের জন্য আমাদের মস্তিষ্ক শান্ত ও কোলাহল মুক্ত পরিবেশ খোঁজে।

ভালো ঘুমের জন্য লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে শোয়ার ঘরটা কম আলোপূর্ণ হয়। এছাড়াও ঘুমানোর সময় ঘরে লাল আলো জ্বালানো যেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে লাল আলো মেলাটোনিন বাড়ায়। ঘুমানোর ১ঘণ্টা পূর্বে সকল প্রকার ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে দূরে থাকা যেতে পারে। বেশি পরিমাণ পানি পান করা যেতে পারে। যেকোনো ব‌ই পড়া যেতে পারে।

আরও পড়ুন: রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপকারিতা। দুর্দান্ত ১০টি উপকারিতা জেনে নিন

ইসলামিক পদ্বতিতে দ্রুত ঘুম আসার কিছু টিপস

ঘুমানোর আগে ওযু করে চোখ বন্ধ করে চারকুল পড়লে,একুশবার বিসমিল্লাহ পড়লে, মনে মনে দুরুদ পড়তে থাকলে খুব শীঘ্রই একটি প্রশান্তিকর ঘুম দেয়া রায়। দেহকে সুস্থ রাখতে হলে প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। এছাড়াও ঘুমানোর একটা নির্দিষ্ট সময় করে নেয়া উচিত। কারণ আমাদের মস্তিষ্ক দেহ এলার্ম মেনে চলতে পছন্দ করে।

স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *