ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি হচ্ছে নামাজ। কুরআনে সবচেয়ে বেশি যে কথাটি এসেছে তা হলো স্বলাত কায়েম করো। তার মানে বুঝতেই পারছেন নামাজের গুরুত্ব কত বেশি। একজন মুসলিম আর অমুসলিম এর পার্থক্য নির্ধারণ করে নামাজ। কেউ বিনা কারনে নামাজ না পড়লে তার জন্য অপেক্ষা করছে ভয়ঙ্কর শাস্তি। আর বেনামাজীর জন্য রয়েছে চিরস্থায়ী জাহান্নাম। আর তা কত ভয়াবহ হবে তা আমরা সবাই জানি। নামাজ না পড়ার জন্য অনেক অজুহাত। কারোর সময় থাকে না বা কারোর পড়তে ইচ্ছে হয় না এমন অনেক অজুহাত আছে। দুনিয়াতে অল্প দিনের মেহমান হয়ে এসেছি তার জন্য এত সময় অথচ যেখানে চিরস্থায়ী থাকবো তার জন্য সময় হয় না আমাদের। যে অবস্হাতেই থাকি না কেনো আমাদের নামাজ পড়তে হবে। কারন আমরা সবাই চাই চিরকালীন শান্তি।

নামাজের প্রকারভেদ

আমাদের দৈনন্দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজকে ফরজ করা হয়েছে। রসুল সঃ মিরাজে গমনের পর থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সুচনা হয়। তার আগে পর্যন্ত ৫০ ওয়াক্ত নামাজ ছিল। তাঁর উম্মতের কস্টের কথা ভেবে কমিয়ে এনে ৫ ওয়াক্ত করা হয়েছে। সেগুলো হলোঃ ১.ফজর, ২.যোহর ৩. আছর ৪. মাগরিব ৫. এশা

নামাজের ওয়াক্তসমুহের সময়ঃ

ফজরঃ রসুল (সঃ) সর্বদা ভোরের অন্ধকারে ফজরের নামাজ আদায় করতেন। সুর্যোদয়ের পর ফজরের নামাজ আর হবে না। অবচেতন বা ঘুমন্ত ব্যক্তির ওপর এই সময়সীমা প্রযোজ্য নয়। সে যখন ঘুম থেকে উঠবে তখনই পড়ে নিবে। এটা যেনো প্রতিদিন এর রুটিনে না হয়ে যায়।

যোহরঃ সুর্য পশ্চিম দিকে গেলে যোহর শুরু হয়।

আছরঃ বস্তুর মুল ছায়া এক গুন হওয়ার পর থেকে আর দ্বিগুন না হওয়া পর্যন্ত আছরের নামাজ পড়তে হয়।

মাগরিবঃ সুর্য পশ্চিম দিকে অস্ত যাওয়ার পরই মাগরিব শুরু হয়। সুর্যের লালিমা শেষ হওয়া পর্যন্ত পড়া যাবে।

এশাঃ মাগরিবের পর থেকে শুরু হয় মধ্যরাতে শেষ হয়। তবে ফজরের আগে পর্যন্ত ও পড়া জায়েজ আছে এই হচ্ছে ৫ ওয়াক্ত নামাজের সময়কাল। এছাড়াও তাহাজ্জুদ, ইশরাক, চাশত এসব নামাজের ওয়াক্ত ভিন্ন ভিন্ন।

নামাজের শর্তাবলী

১। মুসলিম হতে হবে ও জ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে। উন্মাদের ওপর নামাজ ফরজ নয়

২। তাকে বয়োপ্রাপ্ত হতে হবে।

৩। সতর ঢাকা হতে হবে। পুরুষ ও নারীর সতর ভিন্ন

৪। নামাজের জায়গা পাক থাকতে হবে। কাপড় পাক ও শরীর পাক থাকতে হবে

আরও পড়ুন: নামাজে প্রচলিত ভুল ত্রুটি – নামাজে ভুল হলে করণীয় কি?

নামাজের ইহকালীন উপকারিতা

নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তা’আলা এটা বলেছেন। যখন মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকবেন আপনার একটা গ্রহনযোগ্যতা আসবে। নামাজের যেসব ইহকালীন উপকারিতা আছে চলুন জেনে নিইঃ

১। নামাজের জন্য প্রথম শর্ত হচ্ছে ওজু করা। ওজু করার মাধ্যমে আপনি পরিস্কার পরিচছন্ন থাকতে পারছেন সবসময়। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার ফলে যেকোনো অসুস্থতা আপনাকে সহজেই ধরতে পারবে না। তাছাড়া পরিস্কার পরিচ্ছন্ন মানুষ কে সবাই পছন্দ করে।

২। নামাজ হতে পারে আপনার রিফ্রেশমেন্ট এর একটা মাধ্যম। অতিরিক্ত মন খারাপে আপনি ওযু করে দাড়িয়ে যাবেন নামাজে। মনের যত খারাপ লাগা সব আল্লাহ কে বলবেন। দেখবেন ম্যাজিকের মত কাজ করবে এ ব্যাপারটা।

৩। আপনি যখন নামাজে দাড়াচ্ছেন আপনার দৃষ্টি থাকছে সেজদার জায়গাতে। ফলে মনোযোগ ধরে রাখতে পারছেন দারুনভাবে। আর এই মনোযোগ ধরে রাখতে পারার কৌশল থেকে পড়াশোনা সহ যেকোনো কাজে মনোযোগ থাকবে আপনার।

৪। নামাজ হতে পারে আপনার ব্যায়ামের একটা মাধ্যম। আপনি যখন রুকু সেজদাতে যাচ্ছেন তখন অটোমেটিক আপনার ব্যায়াম হয়ে যাচ্ছে।

৫। প্রতিদিন জামাতে নামাজ আদায়ের ফলে আপনার এলাকার সবার সাথে একটা সুসম্পর্ক তৈরী হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে যেকোনো প্রয়োজনে তাদেরকে আপনি পাশে পাবেন।

ইসলাম নিয়ে আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *